নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রেতাত্মা ও ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ৫ আগষ্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর পলাতক রয়েছেন। সরকার পতনের পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের বাড়ি ভাংচুর করে পুড়িয়ে দিয়েছে।
তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের নামে পৈশাচিক হত্যাকান্ডসহ নানা অভিযোগে ময়মনসিংহ সহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। অথচ ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের ডোনার,গফরগাঁও আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত স্থানীয় নেতা ও ঢাকা ওয়াসার অবসরপ্রাপ্ত রাজস্ব পরিদর্শক আব্দুল আলীম এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন না করায় স্থানীয়রা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
আমাদের ময়মনসিংহ সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের ডোনার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুল আলীম এমপি’র নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন এবং নানা সুবিধা আদায় করতেন।
সাংবাদিকদের তিনি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এর ঘনিষ্ঠজন বলে ভয় দেখাতেন। এছাড়া,আওয়ামী লীগ নেত্রী শোভাকে দিয়ে সাংবাদিকদের হুমকিও দিতেন।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর তিনি এলাকায় আসা-যাওয়া কম করেন। নিজের সম্পদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষার জন্যে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গফরগাঁও’র স্থানীয় বাসিন্দা ও একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী হালিম মোল্লা বলেন,নব্যধনী আলীম ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এর বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অর্থায়ন করেছেন। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে আলীম ছিলেন সোচ্চার। আন্দোলন দমনে তিনি স্থানীয়ভাবে অর্থায়নও করেছেন।এমপি’র ক্ষমতায় বলিয়ান হয়ে ধরাকে সরাজ্ঞান করতেন তিনি।
মো: আবদুল আলীম ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব জোন-৩ এ রাজস্ব পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি এভাবেই রাজকীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে চলতেন অথচ তার বেতন ছিল সর্বসাকুল্যে ৩৫ হাজার টাকা। ।
এমনকি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এর সাথে সখ্যতা থাকার কারনে দুদককে পর্যন্ত কেয়ার করতেন না আলীম। ধারনা করা হয় এমপি’র মাধ্যমে তদবির করে তার বিরুদ্ধে শুরু হওয়া দুদকের তদন্ত কার্যক্রম থামিয়ে দিয়েছেন। এলাকায় তিনি এমনটাই প্রচার করতেন। এমপি যখন পলাতক তখন আলীম বহাল তবিয়তে আছেন। এলাকায় যাতায়াত করছেন। এমপি’র বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেখানে অজ্ঞাত আসামীর উল্লেখ রয়েছে। আব্দুল আলীমকে অজ্ঞাত আসামীর আওতায় গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য,মো: আবদুল আলীম ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব জোন-৩ এ সর্বশেষ রাজস্ব পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি অবসরে গেছেন। অবসর গ্রহনের পূর্বে সর্বসাকুল্যে ৩৫ হাজার টাকা বেতনের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি আব্দুল আলীম নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নামে-বেনামে আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন।
আব্দুল আলীম ও তার স্ত্রী পান্না বেগম এর অনিয়ম দুর্নীতি ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তদন্ত শুরু করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন কিন্তু রহস্যজনক কারনে তদন্ত কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়।
ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার জয়দরখালীস্থ শহীদ নগরের বাসিন্দা আবুল হাশেম এর পূত্র আব্দুল আলীম ওয়াসার চাকরির সুবাদে এখন গ্রামের সর্বোচ্চ ধনবান ব্যক্তি। তিনি যে বিপুল পরিমাণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মালিক তা তার চাকুরীর বেতনের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
Leave a Reply